এস এ আখঞ্জী,তাহিরপুর: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ,নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ,এই স্লোগান কে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় চলছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ইং।
অপরদিকে, উপজেলার হাওর নদী-নালা খালবিলে অবাধে নিষিদ্ধ কোনাজাল কারেন্ট জাল, ও চায়না জাল দিয়ে মাছের পোনা নিধনে মেতে উঠেছে স্থানীয় অসাধু জেলেরা।এতে এখানকার দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবার আশঙ্কা করছে স্থানীয় সচেতন মহল।
গতকাল (২৬জুলাই) দুপুরে সরেজমিন উপজেলার পালইরহাওর,বনুয়ার হাওর,মাটিয়ান হাওর,ও টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায়।মাটিয়ান হাওর,পালইর হাওর ও টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকাসহ কয়েকটি হাওরে নিষিদ্ধ কোনাজাল কারেন্ট জাল ও প্লাস্টিকের চাঁই দিয়ে অবাধে জেলেরা পোনামাছ নিধন করছে। উপজেলা মৎস্য বিভাগের তৎপরতা না থাকায় অসাধু মৎস্যজীবীরা সহজে কোনাজাল দিয়ে পোনামাছ নিধন করছে বলে স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করেন।
জানাযায় গেল কিছুদিন পূর্বে স্বরণকালের প্রলয়ংকরী বন্যায়,বন্যা কবলিত এলাকায় সবকটি পুকুর জলাশয়ের পোনামাছ বিভিন্ন হাওর বিল ও নদীতে চলে আসে। এবং নিরাপদ আশ্রয় ভেবে হাওর বিলের কিনারে কিনারে ঘুরে বেড়ায়, সেই সুযোগে স্থানীয় কিছু অসাধু মৎস্যজীবী এলাকার বিভিন্ন হাওর নদী খাল বিলে নিষিদ্ধ কোনাজাল,কারেন্টজাল,চায়না জাল দিয়ে নির্বিঘ্নে নিধন করছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় প্রজাতির পোনামাছ।আর এসব মাছ স্থানীয় সব হাট-বাজারসহ মাছের আড়তে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই।
যদিও মাছের বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এসময় হাওর নদ-নদীতে কালবাউশ, মৃগেল,সহ রুই জতীয় মাছের পোনামাছ ধরা বাধা-নিষেধ রয়েছে।কিন্তু জেলেদের বিকল্প জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা না থাকায় এ অঞ্চলের মৎস্যজীবীরা হাওরগুলোতে অবাধে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে পোনামাছ নিধন করছে।কোনা জালের ছিদ্র মাশারির ছিদ্রের চেয়ে ছোট হওয়ায় মাছের একেবারে ছোট পোনাটিও উঠে আসে।অনেক সময় এ জালে মাছের ডিমও আটকা পড়ে যায়। এই জাল নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের চেয়েও ভয়ংকর।
বিভিন্ন তথ্যসুত্রে জানা যায় হাওরে প্রায় ৫৫ প্রজাতির মাছ বিপন্ন অবস্থায়, এর মধ্যে মহাশোল, রিটা, নানিদ, বাঘাইড়সহ পাঁচ প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। যত দ্রুত সম্ভব কোনাজাল,চায়না জাল,কারেন্ট জাল ব্যবহার বন্ধ করার দাবি জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান নিষিদ্ধ কোনাজাল দিয়ে ভোর ৫টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আবার সন্ধ্যা ৬টা হতে ভোররাত পর্যন্ত পালাক্রমে চলে পোনামাছ শিকার।একেকটা কোনাজালের সাথে ৮-১০জন করে দল গঠন করে,১০-১২টি জালের সংঘবদ্ধ জেলেরা প্রতিটি কোনাজালে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০কেজি করে পোনামাছ নিধন করে।এ হিসাবে টাঙ্গুয়ার হাওর সহ সারা উপজেলায় কমপক্ষে প্রতিদিন কয়েক টন পোনামাছ শিকার করে এই অসাধু জেলেরা।এবং এই পোনামাছ এলাকার বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করা হয়।হাওর পাড়ের সচেতন মহল জানান অন্তত এই কয়টা মাস মাছের পোনা শিকার বন্ধ করা গেলে এই এলাকার হাওর বিল নদী-খাল পূর্বের ন্যায় দেশীয় মাছে ভরপুর হয়ে যেতো। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হত।
তাহিরপুর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন বলেন, গত তিনদিন আগে, অভিযান চালিয়ে ৫টি কোনা জাল,উপজেলার ফুটবল মাঠে জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ভশ্মিভূত করেছি, তিনি আরও মৎসজীবীদেরকে সচেতন করার লক্ষ্যে, বিভিন্ন বাজারে সাইনবোর্ড, ফেস্টুন, ব্যানার,বিলবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছি,যাতে করে পোনা মাছ
নিধন বন্ধ করে। মৎস্যের বংশ রক্ষার স্বার্থে অভিযান চলমান থাকবে।
এবিনিউজ টুয়েন্টিফোর বিডিডটকম//এফ//